Skip to main content

Posts

রমজানের নূরানী সৌন্দর্য

  বারো মাসের মধ্যে আমার প্রিয় মাস রমজান। সারা বছর যা-ই করি না কেন, এই এক মাস আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকার এক অপার সুযোগ এনে দেয়। এগারো মাস কাজ করি, আয়-উপার্জনে ব্যস্ত থাকি, কিন্তু এই মাসে মনকে একটু বেশি আল্লাহর পথে নিবিষ্ট করি। রমজান মাসে কাজের ব্যস্ততা কমিয়ে দিই, যেন ইবাদতে মনোযোগ দিতে পারি। এই মাসের আবহাওয়া অন্যরকম—একটি নূরানী অনুভূতি জাগ্রত হয় চারপাশে। প্রকৃতির দিকে তাকালেই মনে হয়, যেন চারদিক রমজানের আলোয় ঝলমল করছে। সকাল নয়-দশটার দিকে ঘুম থেকে উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করি, তারপর কুরআন তেলাওয়াত করে মনকে প্রশান্ত করি। মিসওয়াক করা, পাঞ্জাবি পরা, এবং যোহরের নামাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা—এই কাজগুলো যেন আত্মার প্রশান্তির কারণ হয়ে ওঠে। রমজানে মসজিদগুলোর ভিড় বেড়ে যায়, রাস্তা দিয়ে চলতে গেলেই অসংখ্য মুসল্লিদের দেখা মেলে। নামাজের পথে তাদের সঙ্গে আড্ডা মারার মজাই আলাদা। যোহরের নামাজের পর অতিরিক্ত দশ-বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়া, তারপর মসজিদের বারান্দায় বসে ইসলামিক আলোচনা করা—এইসবই দিনটাকে আরো অর্থবহ করে তোলে। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে মিলে বাজারে যাওয়া, কেনাকাটা করা—রমজানের একটি বিশেষ আন...

ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট দিন হয় না

  যদি তুমি সত্যিকারের হৃদয় দিয়ে কাউকে ভালোবাসো, তাহলে প্রতিটি দিনই ভালোবাসার দিন। প্রতিদিনই রোজ ডে, প্রপোজ ডে, হাগ ডে, প্রমিস ডে, চকলেট ডে এবং ভ্যালেন্টাইন ডে। প্রতিটি দিন প্রিয় মানুষের জন্মদিনের মতোই বিশেষ হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট একদিনের জন্য অপেক্ষা না করে, তোমার প্রিয় মানুষ যখন মন খারাপ করবে, তখনই তাকে একটি গোলাপ দাও। দেখবে, তার দুঃখ মুহূর্তেই উড়ে যাবে, এবং সে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করবে। বছরের নির্দিষ্ট দিনে চকলেট না দিয়ে, হঠাৎ করে রাতের বেলা বা কঠিন সময়ে তাকে চকলেট উপহার দাও, দেখবে সে কতটা খুশি হবে এবং বুঝতে পারবে তুমি তাকে সত্যিই কেয়ার করো। একটি নির্দিষ্ট দিনে ভালোবাসার প্রস্তাব না দিয়ে, প্রতিদিনই তাকে "আই লাভ ইউ" বলো। যারা সত্যিকারের ভালোবাসে, তারা জানে প্রিয় মানুষের মুখ থেকে এই কথাটি শোনার অনুভূতি কতটা অসাধারণ। একটি নির্দিষ্ট দিনে প্রমিস না করে, প্রতিদিন ঘুমানোর আগে প্রতিজ্ঞা করো—এই সম্পর্ক কখনও ভাঙবে না, এটি বিয়ে পর্যন্ত এবং মৃত্যুর পরও থাকবে। একটি নির্দিষ্ট দিনে শুধু হাগ না করে, যখনই তার মন খারাপ হবে বা তোমার মন খারাপ হবে, তখনই তাকে শক্ত করে জড...

বরাক উপত্যকায় সড়ক দুর্ঘটনার মহামারী: আমাদের করণীয়

  বরাক উপত্যকায় সড়ক দুর্ঘটনার মহামারী: আমাদের করণীয়          প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনতে হয় কোনো না কোনো সড়ক দুর্ঘটনার খবর। কখনো একটি পরিবারের সবাই শেষ হয়ে যায়, কখনো পরিবারের একমাত্র সন্তান নিঃশেষ হয়ে যায় রাস্তায়, আবার কখনো নববিবাহিত কেউ অকালে প্রাণ হারায়। দুর্ঘটনার এই মর্মান্তিক খবরগুলো আমাদের জীবনের এক নিষ্ঠুর বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। যেন ঘুম থেকে উঠে খবর শুনি, দুঃখ পাই, আবার ঘুমিয়ে পড়ি—এটাই যেন রুটিন হয়ে গেছে! করোনা মহামারী আমাদের জীবনে এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হয়ে এসেছিল, কিন্তু বরাক উপত্যকায় সড়ক দুর্ঘটনার হার এখন যেন তার থেকেও বড় এক মহামারী হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু অনিবার্য, একথা আমরা জানি, কিন্তু অকাল মৃত্যু—এটি যে কতটা বেদনাদায়ক, তা শুধু সেই পরিবারগুলোই জানে, যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার আসল কারণ: আমাদেরই দায়িত্বহীনতা আমাদের চারপাশে লক্ষ করলে দেখতে পাবেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশের গাড়ি বা সরকারি বাস খুব কমই দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাহলে কেন বেশি দুর্ঘটনা হয় বাইক, অটো, টুকটুকি ও প্রাইভেট গাড়ি...

Inspiring Entrepreneurship in Our Communities

  Whenever there are religious gatherings like waaz mahfils in the neighborhood, you'll often find small children setting up stalls, selling items they’ve made or brought from home. These little ones have big dreams of running a business, believing that their sales will soar during the event and they'll earn some money. Respecting their entrepreneurial spirit, I make it a point to buy something from every stall, even if it’s in small quantities, whenever I attend such gatherings. This act is my way of encouraging their business mindset and supporting their dreams. The food or items they sell are often prepared with great care and cleanliness, with their mothers or sisters putting their hearts into making them. So, I urge everyone attending such gatherings to purchase something from these children, no matter how small. It’s not just about buying food—it’s about nurturing the seeds of entrepreneurship within them. And if your own children ever express interest in setting up such ...

A Memorable Day of Gratitude and Accomplishment

  November 2019 marked the completion of my degree, a milestone that holds a special place in the hearts of many students. For many, the dream of donning this graduation attire remains unfulfilled due to various challenges. But today, I am deeply grateful to Allah for allowing me to live this dream. Wearing this gown fills me with immense pride and happiness. This day will forever remain etched in my memory, not just because of the achievement, but because I got to reunite with my college friends—friends I may never see again in the same way. Many of them have moved on with their lives; some are married, some came with their children, while others brought their spouses or in-laws. It was a bittersweet realization that life had taken us all in different directions. Most boys, unfortunately, could not attend, as many had to sacrifice their dreams for the sake of their families. They shouldered responsibilities early, with some working abroad to support their loved ones. On the other ...

পুরনো দিনের ফোন, পুরনো দিনের স্মৃতি

  সময়টা ২০০৮ থেকে ২০১১—যেন এক আলাদা জগৎ। তখন আমাদের জীবন মোবাইলের মেসেজেই সীমাবদ্ধ ছিল। অনলাইন বলতে শুধু গান ডাউনলোড করা জানতাম, আর কিছুই নয়। সবাই এয়ারসেল সিমে ৩৫ টাকার এসএমএস প্যাক রিচার্জ করে একে অপরকে শায়েরি আর জোকস ফরওয়ার্ড করতাম। প্রতিদিন ১০০টা এসএমএসের সীমা ছিল, কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকাদের ১০০টা মেসেজ সকাল দশটার আগেই শেষ হয়ে যেত। এরপর মেন ব্যালেন্স দিয়ে মেসেজ চালানো হতো। আমিও এই অভিজ্ঞতা থেকে বাদ যাইনি। ২০০৮-০৯ সালে আমাদের ঘরে প্রথম মোবাইল এলো। তখন সেটার মাধ্যমেই মেসেজ করতাম। ২০০৯ সালে আমার প্রথম মোবাইল নোকিয়া ২৭০০ ক্লাসিক কেনা হলো। কী আনন্দই না হয়েছিল সেই দিনগুলোতে! ১০০টা এসএমএস শেষ করে শায়েরি আর জোকস পাঠানোর নেশায় পাগল হয়ে থাকতাম। ২০১১ সাল ছিল একটা মাইলফলক। প্রথম জিমেইল আইডি খুললাম, প্রথম ফেসবুকে পা রাখলাম। সেই সময় টুইটার অ্যাকাউন্টও খুলেছিলাম। মজার ব্যাপার, তখন যে শায়েরি বা জোকসগুলো মেসেজে ফরওয়ার্ড করতাম, সেগুলোই ফেসবুকে পোস্ট করতাম। আজও ফেসবুকের মেমোরিজে ২০১১-১২ সালের সেই পোস্টগুলো দেখি। তবে সেগুলো হাইড করে রেখেছি। কারণ, এখন যদি কেউ সেগুলো দেখে, আমার ইজ্জত নিয়ে মিম বানিয়ে ...

শৈশবের রঙিন স্মৃতি: এক টুকরো স্বর্গ

  শিশুকাল—যেন মাটির সোঁদা গন্ধে ভরা এক স্বপ্নময় সময়। তখন ছিল না মোবাইল, না ছিল ভিডিও গেম বা টিকটকের মতো কিছু। ছিল মাটির তৈরি মানুষ, মাটিতে মেশা খেলা, আর নির্ভেজাল হাসি-খুশি। শৈশবের সেই দিনগুলো যেন একটা ছোট্ট আদিম যুগ, যেখানে আমরা নিজেরাই নিজেদের পৃথিবী বানিয়ে নিতাম। আমরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে রান্নাবাড়া করতাম। কেউ একজন হতো গৃহস্থ, আর অন্যরা আত্মীয় সেজে আসত সেই “বাসায়”। বাসন হতো নারিকেলের মালা, আর সবজি হিসেবে গাছের লতাপাতা। ঘাস ছিল আমাদের প্রধান সবজি। আর রান্নার মসলা? সেটা ছিল ইটের গুঁড়া! ইটের গুঁড়োতে সবজির এমন লাল রং হতো যে, আজকের এমডিএইচ মসলাও তাকে হার মানাবে। যখন একেবারে ছোট ছিলাম, তখন রান্নাটা হতো কাঁচা। একটু বড় হতে শিখে গেলাম আগুন জ্বালানো। মালার নিচে আগুন দিয়ে রান্না করতাম। যদিও রান্নার মূল দায়িত্ব ছিল মেয়েদের। আমাদের কাজ ছিল “সবজি” জোগাড় করা। আমরা ছেলেরা মুরতা পাতা দিয়ে টাকা বানাতাম, আর সেই টাকা দিয়ে “কেনাকাটা” করতাম। ছোটবেলার এই খেলাগুলো ছিল আমাদের জীবনের ছোট্ট উৎসব। আমাদের সময় গ্রামের বাচ্চারা মাটির সঙ্গে মিশে থাকত। তারা দৌড়াত, খেলত, আর কোথাও পড়ে গেলে সহজেই উঠে দাঁড়িয়ে হাসতে ...

ছোটবেলায় নানা বাড়ির আনন্দ

  ছোটবেলায় আমাদের নিজের জমি ছিল না। তাই স্কুল ছুটি হলে ডিসেম্বর মাসে মামাবাড়ি যেতাম। সেসব দিনগুলো যেন এক অন্যরকম স্বপ্ন ছিল। ধান মারার জন্য মাঠে গরু দিয়ে মাড়াই করা হতো। মাঠের মধ্যে “শাতল” বানানো হতো—ছোট ছোট ঘর বানানো, যেখানে দুপুরে লাড্ডু আর মুড়ি বিক্রি করতে লোক আসত। আমরা ধান দিয়ে লাড্ডু আর মুড়ি কিনে খেতাম। সেই স্বাদ আর আনন্দ আজও ভুলতে পারি না। মামাবাড়ির একপাশে ছিল একটা ছোট্ট “বিছরা,” যেখানে নানি সুন্দরভাবে লাইন ধরে নানান রকমের সবজি লাগাতেন। আমরা সবাই মিলে মাটি কোপাতাম, গাছে পানি দিতাম। নানির সঙ্গে কাজ করতে করতেই শিখেছি প্রকৃতির যত্ন নেওয়ার আনন্দ। মাঠের আশেপাশে ছোট ছোট গর্ত ছিল, যেখানে বর্ষায় মাছ ঢুকত। জল শুকিয়ে গেলে মামা সেই মাছ ধরতেন। তখন নানি সেই টাটকা মাছ দিয়ে বিছরার ফরাসি শাক তুলে রান্না করতেন। পেঁয়াজপাতা আর ধনিয়াপাতার সুগন্ধে সে তরকারি যে কী অসাধারণ ছিল! আজও সেই স্বাদ আর গন্ধ কোথাও পাইনি। বড় মামা ছিলেন কেরাম খেলার শৌখিন। আমরা যখন তার জন্য মাটির চুলা থেকে বিড়ি জ্বালিয়ে নিয়ে আসতাম, পথে দু-একটা টান না মেরে থাকতে পারতাম না। শীতকালে বড়ই গাছ থেকে বড়ই পেরে সবাই ম...

এই কাজ আমার কাছে শুধু শখ নয়, এটা আমার আত্মার শান্তি

  ছোটবেলায় যখন প্রশান্ত স্যারের বাড়িতে টিউশন করতে যেতাম, দেখতাম স্যার ব্যস্ততার মাঝেও কী সুন্দরভাবে সময় বের করে উনার ঘরের পাশে বাগানে নানা ধরনের সবজি লাগাতেন। স্যারের সেই সবজির বাগান দেখে মনে হতো, প্রকৃতির সান্নিধ্যে এ যেন এক অন্যরকম শান্তি। স্যারকে সবুজের মাঝে কাজ করতে দেখে, আমার মনেও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হলো। সেই সময় থেকেই প্রকৃতির প্রতি এক অদ্ভুত টান অনুভব করতাম। তবে পড়াশোনার চাপে তখন নিজের জন্য সময় বের করা সম্ভব ছিল না। এরপর যখন মামাবাড়ি যেতাম, দেখতাম নানি কী যত্ন করে ঘরের পাশের একটুকরো জমিতে ছোট্ট সবজি বাগান বানিয়েছেন। আমরা নানিকে সাহায্য করতাম, মাটি কোপানো থেকে শুরু করে বীজ বোনা পর্যন্ত সব কিছুতে। সেই সময় নানির সঙ্গ পেতে আর মাটির গন্ধে মাখামাখি হতে কী যে ভালো লাগতো, বলে বোঝাতে পারবো না। সেই ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলোর মধ্যেই যেন এক অদ্ভুত আনন্দ খুঁজে পেতাম। তখন থেকেই মনে স্বপ্ন জাগলো—একদিন আমিও আমার নিজের ছোট্ট জমিতে সবজি চাষ করব। ২০১৯ সালে ডিগ্রি কমপ্লিট করার পর হাতে অনেকটা সময় পেলাম। সেই স্বপ্ন এবার বাস্তবে রূপ দেওয়ার সুযোগ এল। জমি কিনলাম, আর শুরু করলাম আমার নিজ...

নিজ রাজ্য ছাড়া অন্য রাজ্যে খাবার পছন্দ না

  ভাইরে ভাই, দুঃখের কথা কোথা থেকে শুরু করি? নিজের গ্রাম, নিজের রাজ্যের সবুজ শ্যামল পরিবেশ ছেড়ে অন্য রাজ্যে পা রাখলে যেন মন আর ভালো থাকে না। মনে হয়, জীবনের সব রঙ ফিকে হয়ে গেছে। গুজরাটে এসে তো একেবারে হতবাক। চারপাশে কেবল ইট-পাথরের নগর, না আছে সবুজ, না আছে খোলামেলা পরিবেশ। প্রকৃতির শীতল ছোঁয়া যেন এখানে পৌঁছায়ই না। আর খাবারের কথা যদি বলি, সেখানে তো যেন নতুন করে এক দুঃখের শুরু। প্রতিটা খাবারে মিষ্টি—চাখতে গেলেই মনটা কেমন জানি কেঁপে ওঠে। আমি তো মিষ্টি একেবারেই পছন্দ করি না, শুধু চায়ে সামান্য মিষ্টি ছাড়া। ক্ষুধার জ্বালায় রাগ করে মরিচ কিনেছিলাম, কিন্তু সেই মরিচটাও যে মিষ্টি হবে, এটা তো ভাবতেই পারিনি। মনে হচ্ছিল, গুজরাটের প্রতিটা মানুষ একটু মোটা কেন, তার কারণ বুঝতে আর বাকি নেই—তারা তো সারাদিন মিষ্টি খায়! আমাদের বাঙালিদের জিহ্বা স্পাইসি খাবার ছাড়া তৃপ্তি পায় না। কিন্তু আমার এই ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় বুঝেছি, দিল্লি, মুম্বাই, পশ্চিমবঙ্গ আর আসাম ছাড়া আর কোথাও আমাদের রুচির খাবার নেই। রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট বা তামিলনাড়ু—সব জায়গাতেই খাবারে মিষ্টি যোগ করা বাধ্যতামূলক যেন। আর...