Skip to main content

পুরনো দিনের ফোন, পুরনো দিনের স্মৃতি

 



সময়টা ২০০৮ থেকে ২০১১—যেন এক আলাদা জগৎ। তখন আমাদের জীবন মোবাইলের মেসেজেই সীমাবদ্ধ ছিল। অনলাইন বলতে শুধু গান ডাউনলোড করা জানতাম, আর কিছুই নয়। সবাই এয়ারসেল সিমে ৩৫ টাকার এসএমএস প্যাক রিচার্জ করে একে অপরকে শায়েরি আর জোকস ফরওয়ার্ড করতাম। প্রতিদিন ১০০টা এসএমএসের সীমা ছিল, কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকাদের ১০০টা মেসেজ সকাল দশটার আগেই শেষ হয়ে যেত। এরপর মেন ব্যালেন্স দিয়ে মেসেজ চালানো হতো। আমিও এই অভিজ্ঞতা থেকে বাদ যাইনি।


২০০৮-০৯ সালে আমাদের ঘরে প্রথম মোবাইল এলো। তখন সেটার মাধ্যমেই মেসেজ করতাম। ২০০৯ সালে আমার প্রথম মোবাইল নোকিয়া ২৭০০ ক্লাসিক কেনা হলো। কী আনন্দই না হয়েছিল সেই দিনগুলোতে! ১০০টা এসএমএস শেষ করে শায়েরি আর জোকস পাঠানোর নেশায় পাগল হয়ে থাকতাম।


২০১১ সাল ছিল একটা মাইলফলক। প্রথম জিমেইল আইডি খুললাম, প্রথম ফেসবুকে পা রাখলাম। সেই সময় টুইটার অ্যাকাউন্টও খুলেছিলাম। মজার ব্যাপার, তখন যে শায়েরি বা জোকসগুলো মেসেজে ফরওয়ার্ড করতাম, সেগুলোই ফেসবুকে পোস্ট করতাম। আজও ফেসবুকের মেমোরিজে ২০১১-১২ সালের সেই পোস্টগুলো দেখি। তবে সেগুলো হাইড করে রেখেছি। কারণ, এখন যদি কেউ সেগুলো দেখে, আমার ইজ্জত নিয়ে মিম বানিয়ে ফেলবে!


তখন এয়ারসেল বা এয়ারটেল সিমে ৫ টাকায় ৫০ এমবি পাওয়া যেত। সারাদিন ফেসবুক করলেও সেই ডেটা শেষ হতো না। রাত ১২টার আগে গান ডাউনলোড করার জন্য সেই ডেটা জমিয়ে রাখতাম। কার্ড এনে রিচার্জ করার পর সেগুলোও সযত্নে জমিয়ে রাখতাম। সেই বটমালা মোবাইল দিয়ে ফেসবুক করার আনন্দ আজকের স্মার্টফোনে খুঁজে পাই না।


আজকে মেমোরিজে হঠাৎ উঠে এলো একটা পুরনো শায়েরি, যেটা সেই সময়ের স্মৃতিগুলোকে আবার চোখের সামনে এনে দিল:


Khushiyo se naraj hai meri jindagi,

Pyar ki mohtaj hai meri jindagi,

Has lete hain logo ko dikhane ke liye,

Warna dard ki kitab hai meri jindagi.


পুরনো ফোনকে মিস করি, মিস করি সেই দিনগুলো। প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, তত স্মৃতির সোনা-রঙা দিনগুলো যেন হারিয়ে গেছে। কিন্তু মন মাঝে মাঝে এখনও সেই নোকিয়া ২৭০০ ক্লাসিকের দিকে ফিরে তাকায়।


Comments